গ্রিন টি খেলে কি গ্যাস হয়
গ্রিন টি খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা নিয়ে অনেকেই উৎসাহী, তবে অনেকের মধ্যেই প্রশ্ন উঠে—গ্রিন টি খেলে কি গ্যাস হয়? এই সুস্বাদু পানীয়টি ওজন কমানো থেকে শুরু করে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য জনপ্রিয়, কিন্তু কিছু লোকের ক্ষেত্রে এটি হজমে অস্বস্তি বা গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
গ্রিন টি খেলে কিছু মানুষের ক্ষেত্রে গ্যাস বা হজমে অস্বস্তি হতে পারে, বিশেষ করে যদি খালি পেটে পান করা হয়। এতে থাকা ক্যাফেইন এবং ট্যানিন পেটের অম্লতা বাড়িয়ে গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। সঠিক সময়ে এবং খাবারের পর পান করলে এই সমস্যা কমানো যায়।
গ্রিন টি খেলে কি গ্যাস হয়ঃ বিশেষজ্ঞদের মতামত
গ্রিন টি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হলেও, এটি খেলে কিছু মানুষের গ্যাস বা হজমে সমস্যা হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, খালি পেটে গ্রিন টি পান করলে হজমে অস্বস্তি হতে পারে।
কেন গ্রিন টি গ্যাসের কারণ হতে পারে?
গ্রিন টি-তে ট্যানিন এবং ক্যাফেইন রয়েছে, যা পেটে অম্লতা বাড়ায়। এই অম্লতা পাকস্থলীর লাইনিংয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করে এবং গ্যাসের সমস্যা বাড়িয়ে তোলে। বিশেষত খালি পেটে গ্রিন টি পান করলে এটি বেশি ক্ষতিকর হতে পারে। এতে হজমের অস্বস্তি, বুক জ্বালা, এবং পেট ফাঁপার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্রিন টি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, তবে খাওয়ার আগে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তারা পরামর্শ দেন যে, খালি পেটে গ্রিন টি পান করা উচিত নয়, বরং খাবারের পর অথবা হালকা খাবারের সঙ্গে এটি পান করা নিরাপদ।
এছাড়াও, দিনে দুই থেকে তিন কাপের বেশি গ্রিন টি পান না করাই ভালো, কারণ অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্যাস এবং অম্লতা বাড়াতে পারে।
কীভাবে গ্যাসের সমস্যা এড়ানো যায়?
গ্রিন টি পানে গ্যাসের সমস্যা এড়াতে কিছু সতর্কতা ও সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করা জরুরি। নিচে এই সমস্যা এড়ানোর জন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ দেওয়া হলো:
১. খালি পেটে গ্রিন টি পান না করাঃ
খালি পেটে গ্রিন টি পান করলে এতে থাকা ক্যাফেইন এবং ট্যানিন পেটের অম্লতা বাড়িয়ে গ্যাসের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, সকালে খালি পেটে গ্রিন টি না খেয়ে, হালকা নাশতার পর পান করা উচিত। এটি হজমকে স্বাভাবিক রাখবে এবং পেটে গ্যাসের সমস্যা কমাবে।
২. খাবারের পর গ্রিন টি পান করাঃ
গ্রিন টি খাওয়ার সেরা সময় হলো খাবারের পর। এটি হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং খাবার থেকে পুষ্টি শোষণে সাহায্য করে। খাবার পর গ্রিন টি পান করলে অম্লতা এবং গ্যাসের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
৩. কম ক্যাফেইনযুক্ত গ্রিন টি বেছে নেওয়াঃ
গ্রিন টি-তে ক্যাফেইন থাকে, যা পেটের অম্লতা বাড়িয়ে গ্যাস তৈরি করতে পারে। যারা গ্যাসের সমস্যায় ভোগেন, তারা কম ক্যাফেইনযুক্ত বা ডিক্যাফ গ্রিন টি বেছে নিতে পারেন। এতে গ্যাসের সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
৪. সঠিক পরিমাণে গ্রিন টি পান করাঃ
গ্রিন টি অতিরিক্ত পরিমাণে পান করলে গ্যাস এবং হজমের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। দিনে দুই থেকে তিন কাপের বেশি গ্রিন টি পান না করাই ভালো। এতে ক্যাফেইনের প্রভাব নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং গ্যাসের ঝুঁকি কমবে।
৫. আদা বা পুদিনা মেশানো গ্রিন টি পান করাঃ
আদা এবং পুদিনার প্রাকৃতিক হজমগত উপকারিতা রয়েছে, যা গ্যাসের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে। গ্রিন টি-তে আদা বা পুদিনা মিশিয়ে পান করলে এটি গ্যাসের সমস্যা কমাতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
৬. হালকা গরম পানিতে গ্রিন টি বানানোঃ
অত্যন্ত গরম পানিতে গ্রিন টি বানালে পেটের অম্লতা বাড়তে পারে। তাই হালকা গরম পানিতে গ্রিন টি তৈরি করা উচিত, যা হজমে সহায়ক হবে এবং গ্যাসের ঝুঁকি কমাবে।
তাই, গ্রিন টি পানের উপকারিতা যেমন রয়েছে, তেমনই কিছু লোকের জন্য এটি গ্যাসের সমস্যার কারণও হতে পারে। সঠিক পদ্ধতিতে ও সময়ে এটি পান করলে এ ধরনের সমস্যা সহজেই এড়ানো সম্ভব।